মিয়ানমারে দণ্ডপ্রাপ্ত দুই রয়টার্স সাংবাদিকের আপিল
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
দৈনিক জাগরণ
প্রকাশিত : ০৩:৩৩ পিএম, ৫ নভেম্বর ২০১৮ সোমবার
ছবি সংগৃহিত
রোহিঙ্গা ইস্যুতে রাষ্ট্রীয় তথ্য সংক্রান্ত গোপনীয়তা আইন ভঙ্গের অভিযোগে মিয়ানমারে সাজাপ্রাপ্ত দুই রয়টার্স সাংবাদিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন। সোমবার (০৫ নভেম্বর) সকালে ইয়াঙ্গুনের হাইকোর্টে আদালতের দেয়া দুই সাংবাদিকের সাত বছরের কারাদন্ডের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন তাদের আইনজীবীরা। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়। তবে এ ব্যাপারে মিয়ানমার সরকারের পক্ষ হতে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।
উল্লেখ্য যে, ২০১৭ সালে রাখাইন অঞ্চলে পরিচালিত সেনা অভিযানের সময় রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো বর্বরচিত গণহত্যার তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে আটক হন রয়টার্সের দুই সাংবাদিক ওয়াও লোনে এবং কিয়াও সোয়ে ও। পরবর্তীতে ২০১৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর তাদের বিরুদ্ধে গঠিত অভিযোগের ভিত্তিতে সাত বছর করে কারাদণ্ড ঘোষণা করে ইয়াঙ্গুনের একটি জেলা আদালত। আদালতে শুনানির সময়ে এক পুলিশ কর্মকর্তা তার দেয়া চাঞ্চল্যকর সাক্ষ্যে বলেছিলেন,ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশনায় কথিত নথি হাতে ধরিয়ে দিয়ে আটক করা হয়েছিল ঐ দুই সাংবাদিককে। পরে বৈরি সাক্ষী ঘোষণা করে উক্ত পুলিশ কর্মকর্তা কেউও কারাদণ্ড দেয় মিয়ানমার আদালত।
রয়টার্স সাংবাদিকদের গ্রেফতার ও কারাদণ্ড দেয়ার ঘটনায় বিশ্বব্যাপী কঠিন সমালোচনার ঝড় উঠে। জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা এ রায়ের সমালোচনা করে তাদের মুক্তি দাবি করে। সাজা ঘোষণার কয়েকদিনের মাথায় রয়টার্স সাংবাদিকদের কারাদণ্ডের পক্ষে সাফাই গান শান্তিতে নোবেলজয়ী মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চি। কারাদণ্ড দেওয়ার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে সু চি বলেন, ‘সাংবাদিক হওয়ার কারণে তাদেরকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়নি, গোপনীয়তা আইন ভঙ্গ করায় আদালত তাদেরকে কারাদণ্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।’ তবে উভয় সাংবাদিক আন্তর্জাতিক ইস্যুতে বৈধভাবে নিযুক্ত ছিলো ঐ দুই সাংবাদিক, নিশ্চিত করে রয়টার্স।
সাজাভুক্ত ঐ দুই রয়টার্স সাংবাদিক সর্বশেষ সোমবার (০৫ নভেম্বর) এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন। আপিলে দাবি করা হয়, ঘটনাটি পুলিশের সাজানো এবং তাদের বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটনের প্রমাণ উপস্থাপনের ক্ষেত্রে ঘাটতি রয়েছে। রয়টার্সের প্রেসিডেন্ট ও এডিটর-ইন-চিফ স্টিফেন জে অ্যাডলার ট্রায়াল কোর্টের রায়টি ভুল দাবি করে দেয়া এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমরা একটি আপিল দায়ের করেছি।’ উক্ত বিবৃতিতে দুই রয়টার্স সাংবাদিককে মুক্তির আদেশ দিয়ে আদেশ শাসন, সংবাদমাদ্যমের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের জন্য মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
ইয়াঙ্গুনের হাইকোর্ট যদি আপিল আবেদন মঞ্জুর করেন, তবে প্রসিকিউটর ও বাদী পক্ষের আইনজীবীর লিখিত ও মৌখিক যুক্তিতর্ক গ্রহণ করবেন আপিল আদালতের একজন বিচারপতি। এরপর এই রায়ের ব্যাপারে স্থায়ী সিদ্ধান্ত জানাবেন তিনি।
- এস.খান