শুক্রবার   ১৫ নভেম্বর ২০২৪   কার্তিক ৩০ ১৪৩১   ১৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তারাপীঠ মন্দিরে পারিবারিক পূজো ব্রাহ্মণবহড়ার ভট্টাচার্য পরিবারের

খান আরশাদ, বীরভূম

পুষ্পপ্রভাত পত্রিকা

প্রকাশিত : ১০:৫৪ পিএম, ১২ অক্টোবর ২০১৯ শনিবার

 

 

এবছর শনিবার শুক্লা চতুর্দশীর দিন মা-তারার আবির্ভাব দিবস উপলক্ষে  বীরভূমের তারাপীঠে মায়ের পূজো দিতে সমাগম হল হাজার হাজার ভক্তের।  মা-তারার মন্দিরে এই আবির্ভাব দিবসের দিনের একটি বিশেষত্ব হলো, এদিন মন্দিরের পাণ্ডাদের ছাড়া একটি মাত্র পরিবারই এখানে পুজো দিতে পারেন সেটা হল ময়ুরেশ্বর থানার অন্তর্গত ব্রাহ্মণবহড়া গ্রামের ভট্টাচার্য্য পরিবার। মন্দিরে পূজো দিতে গেলে সাধারণত মন্দিরের পূরোহিত পান্ডাদের মাধ্যমে পূজো দিতে হয়। কিন্তু ব্রাহ্মণবহড়া গ্রামের ভট্টাচার্য্য পরিবারই একমাত্র পরিবার, যে পরিবারের সদস্যরা অন্য কোন পূরোহিত পান্ডাদের ছাড়াই মন্দিরে তারামায়ের পূজো দিতে পারেন। এই পরিবারের এক সদস্য শিক্ষক তথা বিশিষ্ট সাংবাদিক মানস ভট্টাচার্য জানান প্রায় ৪০০ বছর আগে তাঁদের নবম পুরুষ গঙ্গাধর ভট্টাচার্য প্রথম পূজো দেন তারাপীঠের মা-তারার মন্দিরে। এই মন্দির যখন প্রতিষ্ঠিত হয় তখন ওই এলাকার রাজা মুলুটি, মজুরহাটি, সাহাপুর ও ব্রাহ্মণবহড়া এই চারটি গ্রামের পুরোহিতদের ডেকে পাঠান মন্দিরে পুজো দেওয়ার জন্য। তখন থেকে ব্রাহ্মণবহড়া গ্রামের ভট্টাচার্য পরিবারের সদস্যরা এই মন্দিরের পুরোহিত হিসেবে পুজো করে আসছেন। বছরের এই বিশেষ দিনটিতে মন্দিরের পাণ্ডাদের ছাড়াই তারা পূজো দেন। মানসবাবু জানান আগে শুধুমাত্র তাঁদের পরিবারের লোকজনই শুধু পূজো দিতেন। কিন্তু  এখন হাজার হাজার ভক্তদের সমাগম হয় এখানে। তাই অন্যান্য পান্ডারা এখন পূজার এই দায়িত্ব সামলান। সময়ের অভাবে এখন মাত্র আধঘণ্টা সময়ের মধ্যে বলিদান তথা পূজোর যাবতীয় কর্ম সারতে হয়। এই আধাঘণ্টা অন্য কেউ পূজো দিতে পারেননা। এরপর পুনরায় মন্দিরের পাণ্ডাদের মাধ্যমে ভক্তরা পূজো দেন। ময়ুরেশ্বর থানার ব্রাহ্মণবহড়া গ্রামের এই ভট্টাচার্য পরিবারের এক সদস্য লোকপাড়া হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক অতিশ ভট্টাচার্য, তাপস ভট্টাচার্য সহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা এবারেও পুজো দিলেন মায়ের মন্দিরে। দূর্গাপূজার যাবতীয় পূজার সরঞ্জামের মতো মা-তারার পূজোতে সবকিছুই নিয়ে আসা হয় পরিবারের তরফ থেকে। মন্দিরের ভেতর বিগ্রহের সামনে বলিদানের জন্য নির্দিষ্ট একটি জায়গা রয়েছে সেখানে একমাত্র এই পরিবারের পক্ষ থেকে বলিদান করা হয়। প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য এই জায়গাটিতে শুধুমাত্র এই একটা দিনই বলিদান করা হয়। বলিদান করার পর জায়গাটিকে ঢেকে দেওয়া হয়। সারা বছর এখানে আর অন্য কেউ বলিদান করতে পারে না। তারাপীঠের মা-তারার মন্দিরে ভট্টাচার্য পরিবারের পূজো ঘিরে মানুষের উৎসাহ উদ্দীপনা ছিলো চোখে পড়ার মত।