শুক্রবার   ১৫ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১ ১৪৩১   ১৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

প্রাকৃতিক দুর্যোগে স্কুল হল কীটপতঙ্গ ও পশুপাখিদের সাঁতার কাটা

হক নাসরিন বানু

পুষ্পপ্রভাত পত্রিকা

প্রকাশিত : ০৮:৫৫ পিএম, ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ মঙ্গলবার

প্রাকৃতিক দুর্যোগে স্কুল হল কীটপতঙ্গ ও পশুপাখিদের সাঁতার কাটার জায়গা

 মালদা: প্রাকৃতিক দুর্যোগে স্কুল হল কীটপতঙ্গ ও পশুপাখিদের সাঁতার কাটার জায়গা। ভবনটি যে একটি স্কুল নীল সাদা রং যদি না থাকতো তাহলে বোঝার উপায় ছিল না। বিশাল এলাকা জুড়ে কখনো দিঘির মত জল দেখা যায় আবার জল নেমে গেলে জঙ্গলে ভরা মাঠ দেখা যায়। সেই মাঠের মধ্যে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বিভিন্ন জলজ উদ্ভিদ থেকে কীটপতঙ্গ পোকামাকড়। প্রায় প্রতিদিনই স্কুল শিক্ষকসহ ছাত্রীদের দেখা মিলছে কীটপতঙ্গ ও বিষধর সাপের। দীর্ঘদিন ধরে স্কুল ক্যাম্পাস টির মধ্যে জল জমে থাকায় ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ এবং জন্মাচ্ছে ডেঙ্গু মশা। আর এই মশাদের আতর ঘরের মধ্যেই নিয়মিত ক্লাস করছে দুটি স্কুলের পড়ুয়ারা। মালদা ইংরেজবাজার শহরের দুই নম্বর গভমেন্ট কলোনির রামকিঙ্কর বালিকা বিদ্যাশ্রম ও দু'নম্বর গভমেন্ট কলোনি গার্লস প্রাথমিক স্কুলের এই সমস্যা দীর্ঘদিনের। এই দুই স্কুলের পক্ষ থেকে পৌরসভা জেলা শিক্ষা দপ্তর থেকে শুরু করে জেলা প্রশাসনকে একাধিকবার লিখিতভাবে জানানো হয়েছে কিন্তু আশ্বাস ছাড়া এখন পর্যন্ত কিছুই মেলেনি তাদের। বেশ কয়েকবার পৌরসভা আধিকারিক ও জেলা প্রশাসনের আধিকারিকেরা পরিদর্শন করে গিয়েছেন কিন্তু সমস্যা সমস্যায় থেকে গেছে কোন সমস্যা সমাধান হয়নি । অস্বাস্থ্যকর নোংরা পরিবেশে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে ক্লাস করায় পড়ুয়া দের মধ্যে বিভিন্ন রোগ ছড়ানোর আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ডেঙ্গু সহ বিভিন্ন পতঙ্গ বাহিত রোগ ছড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে। এমন সময় চরম সমস্যায় পড়েছে দুই স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা।যদিও দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন জেলাশাসক কৌশিক ভট্টাচার্য্য। জেলাশাসক আরো জানান স্কুলের পক্ষ থেকে বিষয়টি লিখিতভাবে জানানো হয়েছিল। তার ফলে স্কুলের বর্তমান পরিস্থিতি দেখার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইঞ্জিনিয়ারদের পাঠানো হয়েছিল তারা আমাকে রিপোর্ট দিলে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইংরেজবাজার পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ২ নম্বর গভমেন্ট কলোনি এলাকায় রয়েছে রামকিঙ্কর বালিকা বৃদ্ধাশ্রম ও দুই নম্বর গভমেন্ট কলোনি গার্লস প্রাথমিক বিদ্যালয় । দুটি স্কুলের আলাদা ভবন থাকলেও একটি ক্যাম্পাসের মধ্যে রয়েছে দুটি স্কুল।সকালে ক্লাস হয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে প্রায় ৪২১ জন পড়ুয়া আর হাইস্কুলে রয়েছে প্রায় ৮৫৫ জন পড়ুয়া। স্কুল ভবনের সামনে বিশাল খেলার মাঠ রয়েছে সেখানেই একসময় দুই স্কুলের পড়ুয়ারা ক্লাসের অবসর সময়ে খেলাধুলো করত। কিন্তু বর্তমানে এই এলাকায় নিকাশি ব্যবস্থা বেহাল হয়ে পড়ায়, একটু বৃষ্টি নামতেই  জল জমে থাকে ও সাথে এলাকার যত নোংরা আবর্জনা জলের সাথে এসে পৌঁছায় স্কুল ক্যাম্পাসের মধ্যে। এর ফলে শ্রেণিকক্ষে জল ঢুকে যায় বেড়ে যায় সাপ ও কীটপতঙ্গের উপদ্রব বন্ধ করে দিতে হয় স্কুল। প্রাথমিক স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক শুভেন্দু চন্দ্র দাস বলেন আমাদের স্কুলের এই সমস্যা দীর্ঘদিনের বছরে প্রায় আট মাস স্কুল ক্যাম্পাসে জল জমে থাকে আমরা এই বিষয়টি স্কুল শিক্ষা দপ্তরের থেকে শুরু করে পৌরসভাকে লিখিতভাবে বারংবার জানিয়েছি কিন্তু এখনো কোনো সমস্যার সমাধানের উদ্যোগ নেয়নি। এদিকে রামকিঙ্কর বালিকা বৃদ্ধাশ্রম এর প্রধান শিক্ষিকা অদিতি ভট্টাচার্য্য জানান যদিও আমি দুমাস হল জয়েন করলাম কিন্তু এসে দেখি চরম দূর্ভোগে ইস্কুলের আমি নিজেই শিক্ষা দপ্তরে জানিয়েছি পরিস্থিতি দেখে এবং তারা এসে ভিজিট করে গিয়েছে কিন্তু কোন সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ দেখছি না এখন পর্যন্ত। এরপরে হয়তো আমাদের আন্দোলনের পথেই নামতে হবে পড়ুয়াদের নিয়ে। এরই মধ্যে বেশকিছু পড়ুয়া সহ শিক্ষিকারা আক্রান্ত হয়েছে পতঙ্গ বাহিত রোগের ডেঙ্গু হয় এক শিক্ষিকার । প্রশাসন তরফ থেকে মাঠের মধ্যে ডেঙ্গু সচেতনতা পোস্টার লাগানো হলেও কোন উদ্যোগ নেয়নি স্কুল ক্যাম্পাসে জমে থাকা পচা নোংরা জলের তৈরি হওয়া মশার আঁতুড়ঘর সংস্কারের। একাদশ শ্রেণির ছাত্রী বর্ণালী দাস স্কুল প্রশাসন এর উপরে রাগ করে জানান আমরা প্রতিনিয়ত স্কুল করতে পারিনা এই সমস্যার জন্য আতঙ্কে থাকি সবসময় কখন সাপে কামড়াবে ডেঙ্গু মশায় কাটবে এবং বৃষ্টি নামলেই জামা জুতো ডিজে বাড়ি যেতে হবে, কত দিনে সুরাহা হবে আমাদের এই সমস্যার।