সিলেট টেস্টঃ ১ম দিনে শেষে এগিয়ে নেই কোনো দলই
স্পোর্টস ডেস্ক
দৈনিক জাগরণ
প্রকাশিত : ০৮:৪২ পিএম, ৩ নভেম্বর ২০১৮ শনিবার
সিলেট টেস্ট, ১ম দিনঃ
সিলেটে শুরু হওয়া প্রথম টেস্টের দিন শেষে সমানে সমান লড়েছে বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে। সিলেটের মাটিতে ঐতিহাসিক এই টেস্ট ম্যাচ শুরু হয় বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক আকরাম খানের ঘণ্টা বাজানোর মধ্য দিয়ে। তবে টসে জিতে ব্যাটিং নিলেও বেশ সুবিধাজনক অবস্থানে থেকে দিন শেষ করতে পারেনি জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যানরা। তেমনি খুব ভালোভাবেও দিন শেষ হয়নি বাংলাদেশী বোলারদের।
স্পিন সহায়ক এই পিচে তিনজন স্পিনার আর এক পেসার নিয়েই একাদশ সাজায় বাংলাদেশ দল। দলে অভিষেক হয় অলরাউন্ডার আরিফুল হক ও লেফট আর্ম অর্থোডক্স নাজমুল ইসলাম অপুর। অন্যদিকে জিম্বাবুয়ে দলে অভিষেক হয় ব্রেন্ডন মাবুতা ও হ্যামিল্টন মাসাকাদজার ছোট ভাই ওয়েলিংটন মাসাকাদজার।
দিনের শুরুতে বেশ দেখে শুনেই শুরু করে ওপেনার ব্রায়েন চারী ও দলীয় অধিনায়ক মাসাকাদজা। তবে ঘণ্টাখানেক বাংলাদেশী বোলারদের আক্ষেপে পোড়ালেও ভুল শট খেলে সাজঘরে ফেরেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান চারী। তাইজুলের বলে বোল্ড হন এই ওপেনার। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতেও তেমন কোনো সুবিধা করতে পারেনি টেলর-মাসাকাদজা। তাইজুল ইসলামের ঘূর্ণিতে পরাজিত হয়ে টেলর ক্যাচ তুলে দেন শর্ট লেগে থাকা নাজমুল হোসেন শান্তর হাতে। আউট হওয়ার আগে ব্রেন্ডন টেলর স্কোর বোর্ডে নিজের নামে যোগ করেন মাত্র ৬ রান। মধ্যাহ্ন বিরতির আগ পর্যন্ত অবশ্য আর কোনো বিপদ হতে দেননি মাসাকাদজা ও সেন উইলিয়ামস। স্কোর বোর্ডে ৮৫ রান তুলে মধ্যাহ্ন বিরতিতে যায় জিম্বাবুয়ে। তবে মধ্যাহ্ন বিরতি থেকে ফিরেই বাংলাদেশকে ব্রেকথ্রু এনে দেন সিলেটের লোকাল বয় আবু জায়েদ রাহী। অর্ধ-শত হাঁকানো জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক মাসাকাদজাকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন এই পেসার।
এরপর দ্রুতই ফিরে যান জিম্বাবুয়ে দলের নির্ভরযোগ্য মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান সিকান্দার রাজা। সরাসরি বোল্ড হন নাজমুল ইসলাম অপুর বলে। আর টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথম উইকেট পেয়ে অপুও তা উদযাপন করে চিরচেনা- নাগিন ভঙ্গিতে।
তবে পঞ্চম উইকেট জুটিতে বাংলাদেশী বোলারদের বেশ শাসনই করে সেন উইলিয়ামস ও পিটার মুর। জিম্বাবুয়ে চা বিরতিতে যায় ওই চার উইকেট নিয়েই। প্রথম দুই সেশনের বিচারে তখন অবশ্য জিম্বাবুয়ে থেকে বেশ এগিয়েই ছিল বাংলাদেশ। প্রথম সেশনে ৩১ ওভারে ৮৫ রান করতে যেখানে দুই উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। সেখানে দ্বিতীয় সেশনে সমান ওভার খেলে স্কোর বোর্ডে মাত্র ৬৪ রান জমা করতে দুই উইকেট হারায় তারা।
কিন্তু তৃতীয় সেশন পুরোটাই ছিল জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যানদের দখলে। সেন উইলিয়ামস আর পিটার মুর বেশ দেখে শুনেই খেলতে থাকে বাংলাদেশী স্পিনারদের। অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ঘুরিয়ে ফিরিয়ে প্রায় সব বোলারকে ব্যবহার কেউই এনে দিতে পারেনি কাঙ্ক্ষিত ব্রেকথ্রু। তাই নিজের হাতেই বোলিংয়ের দায়িত্ব তুলে নেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। সাফল্যও পেয়ে যান বেশ দ্রুত। নিজের ব্যক্তিগত দ্বিতীয় ওভারেই ফেরান সেট হয়ে যাওয়া সেন উইলিয়ামসকে। তবে সাজঘরে ফেরার আগে বাংলাদেশী বোলারদের বেশ ভালো পরীক্ষাই নেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। করেন দলীয় সর্বোচ্চ ৮৮ রান।
তবে দিন শেষ করার আগে আর কোনো বিপদ আসতে দেয়নি উইকেটে থাকা পিটার মুর ও রেজিস চাকাভা। অপরাজিত থেকে দিন শেষ করেন এই দুই ব্যাটসম্যান। আগামীকাল মুর ৩৭ রান ও চাকাভা ২০ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু করবেন। বাংলাদেশের হয়ে দুটি উইকেট নিয়েছে তাইজুল ইসলাম। রাহী, নাজমুল অপু ও মাহমুদুল্লাহ পেয়েছেন একটি করে উইকেট।
১ম দিন শেষে স্কোরকার্ডঃ
জিম্বাবুয়ে (১ম ইনিংস) : (মাসাকাদজা ৫২, চারী ১৩, টেলর ৬, উইলিয়ামস ৮৮, রাজা ১৯, মুর ৩৭*, চাকাভা ২০*; রাহী ১৮-৩-৬১-১, তাইজুল ২৭-৩-৮৬-২, আরিফুল ৪-১-৭-০, মিরাজ ২১-৬-৩৭-০, মাহমুদুল্লাহ ২-০-২-১)
উইকেটের পতনঃ ১-৩৫ (চারী, ১০.৪ ওভার), ২-৪৭ (টেলর, ১৬.২), ৩-৮৫ (মাসাকাদজা, ৩১.৬), ৪-১২৯ (রাজা, ৪৭.৩), ৫-২০১ (উইলিয়ামস, ৭৬.৩)