শুক্রবার   ১৫ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১ ১৪৩১   ১৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজধানীর কাঁচাবাজারে সবজির দাম কমছে

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক

দৈনিক জাগরণ

প্রকাশিত : ০৮:৪০ পিএম, ৩ নভেম্বর ২০১৮ শনিবার


হঠাৎ পরিবহন শ্রমিকদের ধর্মঘটে রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোতে সবজির দাম অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধিপায়।  ফলে স্বল্প ও নিম্ন আয়ের মানুষ পড়ে চরম ভোগান্তিতে। তবে ধর্মঘট প্রত্যাহার ও শীতের সবজির যোগান বৃদ্ধি পাওয়ায় স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে সবজির দাম।  কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে নগরবাসীর মধ্যে। রাজধানীর অধিকাংশ কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে পর্যাপ্ত সবজির যোগান রয়েছে।  দামও নাগালের মধ্যে। তবে কিছু শীতের সবজির দাম এখনো কিছুটা বেশি রয়েছে। আগামী দুই তিন দিনের মধ্যে সেগুলোর দামও কমে আসবে বলে জানিয়েছেন সবজি ব্যবসায়ীরা। কাওরান বাজারের সবজি ব্যবসায়ী জামাল শেখ জানান, দামবৃদ্ধির পেছনে তাদের কোন হাত ছিলো না। পরিবহন ধর্মঘটের কারণে বাজারে সবজির যোগান কম ছিলো এবং দাম ও বেশি ছিলো। তিনি বলেন, শীতের সবজির যোগান এবার ভালো। আশা করি সবজির দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যেই থাকবে।


গত সপ্তাহে আট দফা দাবিতে সারা দেশে ধর্মঘট পালন করে সড়ক পরিবহন শ্রমিকরা। ফলে রাজধানীতে কোন সবজির গাড়ি প্রবেশ করতে পারেনি। এতে কাঁচাবাজারগুলোতে সবজির দাম লাগামহীনভাবে বৃদ্ধি পায়। এদিকে একধরনের অসাধু ব্যবসায়ীরা এই সুযোগে আলু, পিয়াজ, রসুন সহ অন্যান্য জিনিসের দামও বাড়িয়ে দেয়। ধর্মঘটের মধ্যে রাজধানীর বাজারে খুচরায় প্রতি কেজি কাঁচা মরিচের দাম ওঠে ১৫০-১৬০ টাকায়, যা পাইকারিতে ছিল ৯০-১০০ টাকা।

শনিবার (৩ নভেম্বর) রাজধানীর খুচরা ও পাইকারি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারভেদে খুচরা বিক্রেতারা ২৫০ গ্রাম কাঁচা মরিচ বিক্রি করছে ১৫-২০ টাকায়। সে হিসাবে প্রতি কেজি মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকার মধ্যে। কেজি হিসাবে কিনলে আরো কিছুটা কমে কিনতে পারছে ক্রেতারা। পাইকারি বাজারের ফড়িয়া বিক্রেতারা প্রতি কেজি মরিচ বিক্রি করছে ৩০-৪০ টাকায়।

সাধারণ মানুষের দাবি সবজির বর্তমান বাজার এখনো একটু চড়া। বাজারের ওপর সরকারের কোন হস্তক্ষেপ না থাকায় ব্যবসায়ীরা অধিক মুনাফা লাভের আশায় দাম বৃদ্ধি করেছে বলে অভিযোগ করেন একাধিক ক্রেতা। শীতকালীন সবজির সরবরাহ বাড়তে থাকায় এ সপ্তাহের মধ্যেই সবজির দাম আরো কমার আশা করছে সাধারণ ক্রেতারা।  

রাজধানীর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে শীতের সবজি ফুলকপি ও বাঁধাকপির সরবরাহ বেড়েছে। এতে করে দামও কিছুটা কমতির দিকে। মাঝারি সাইজের প্রতিটি ফুলকপি ৬০-৬৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে সপ্তাহখানেক আগে। সরবরাহ বাড়ার কারণে এগুলো বাজারভেদে ৪০-৫০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। বাঁধাকপির দামও ৩৫-৪০ টাকা থেকে কমে ৩০-৩৫ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।
ফার্মগেট কাঁচাবাজারের বিক্রেতা আরিফ মিয়া জানান, এক সপ্তাহ আগে ফুলকপির যোগান কম ছিল। দুই দিন ধরে পাইকারি বাজারে প্রচুর ফুলকপি আসছে। এ কারণে দামও একটু কম। এই বিক্রেতা প্রতিটি ফুলকপি ৪৫ টাকা করে বিক্রি করছেন বলেও জানান।

দেশি জাতের নতুন শিম বাজারে এসেছে। এগুলো ৬০-৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে। মাসখানেক ধরে যে শিম বাজারে বিক্রি হচ্ছিল ১০০ টাকা বা তারও বেশি দামে।  তবে নতুন শিমের সরবরাহ খুব বেশি নয়। সপ্তাহখানেকের মধ্যে শিমের সরবরাহ আরো বাড়বে বলে জানিয়েছেন পাইকারি বিক্রেতারা।

শীতকালীন নতুন বেগুন বাজারে পাওয়া গেলেও দাম আগের মতোই চড়া। প্রতি কেজি বেগুন ৫০ টাকার কমে পাওয়া যাচ্ছে না। এ ছাড়া নতুন আসা পণ্যের মধ্যে রয়েছে খুব ছোট ছোট পাতা পেঁয়াজ। তবে দাম খুব চড়া। প্রতি কেজি পাতা পেঁয়াজ ৮০-১০০ টাকা দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে। এ পণ্যের সরবরাহ খুব কম বলে জানা গেছে।

কারওয়ান বাজারের সবজির আড়তদার কামাল হোসেন বলেন, ‘আগামী ১৫ দিনের মধ্যে প্রচুর সবজি বাজারে আসবে। তখন সব সবজিরই দাম কমে যাবে। এখন কিছু কিছু জায়গার শীতের সবজি উঠতে শুরু করেছে মাত্র।’

তবে খুচরা বাজারে কমেনি ডিমের দাম। খামারের মুরগির ডিম প্রতি হালি বিক্রি হচ্ছে ৩৬-৩৮ টাকা দরে। স্থিতিশীল রয়েছে পেঁয়াজের বাজারও। প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৪০-৪৫ টাকা। আমদানি করা পেঁয়াজ ৩০-৩৫ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। তবে দুটি মসলাজাতীয় পণ্যের দাম বেড়েছে, যাতে করে এ সপ্তাহে কিছুটা বাড়তি খরচ হবে ক্রেতাদের। দেশি রসুনের দাম কেজিতে ১০-১৫ টাকা বেড়ে ৬০-৭০ টাকা এবং আদার দাম ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে ১৪০-১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।