রোববার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১   ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত এই মুহূর্তে ইতিহাসের নিকৃষ্টতম জল সংকটের মুখোমুখি

রাইহানুল ইসলাম। কালিয়াচক

পুষ্পপ্রভাত পত্রিকা

প্রকাশিত : ০৯:২২ এএম, ১৪ জুলাই ২০১৯ রোববার

ভারত এই মুহূর্তে ইতিহাসের নিকৃষ্টতম জল সংকটের মুখোমুখি। এই মুহূর্তে ৬০ কোটির ওপর ভারতীয় ভয়ঙ্কর জল-সংকটের সম্মুখীন। এবং, প্রত্যেক বছর কমপক্ষে দু’লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয় পানীয় জলের সংকটের অভাবে। এই জল সংকট সামনের দিনগুলোয় আরও খারাপ আকার ধারণ করতে চলেছে। তার কারণ, নীতি আয়োগের রিপোর্টটি জানাচ্ছে, ২০৩০ সালে দেশের জল সরবরাহ ব্যবস্থা এখনকার নিরিখে অন্তত দ্বিগুণ বাড়াতে হবে। তার অর্থ হল , আবারও লাখো মানুষ জল সংকটের মুখোমুখি হবেন এবং জিডিপির বৃদ্ধি কমে যাবে অন্তত ৬ শতাংশ। ‘কম্পোজিট ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট ইনডেক্ষ; শীর্ষক ওই রিপোর্টি প্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় জলসম্পদ মন্ত্রী নীতিন গড়করি। এই রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, একুশটি বড়ো শহর আগামী ২০২০ সালের মধ্যে প্রবল জল সংকটের মুখোমুখি হবে। যার ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হবেন অন্তত ১০ কোটি ভারতীয়। একটি স্বাধীন সংস্থা কর্তৃক তৈরি হওয়া এই রিপোর্টটিতে বলা হয়েছে, এই দেশের অন্তত ৭০ শতাংশ জলই দূষিত। জলের গুণমানের সূচক হিসাবে যা গোটা বিশ্বে ভারতকে ১২২’টি দেশের মধ্যে ১২০’তম স্থানে নামিয়ে ফেলেছে। নীতি আয়োগ প্রতিটি রাজ্যের জন্যও একটি সূচক প্রস্তুত করেছে। 9’টি আলাদা সেক্টর তৈরি করেছে তারা। তুলে ধরেছে ভূগর্ভস্থ জল সংক্রান্ত 28’টি বিভিন্ন দিক।

ইতিমধ্যে চেন্নাই, মহারাষ্ট, রাজস্থান, গুজরাট ও কেরাল‌াসহ বিভিন্ন রাজ্যে অস্বাভাবিক জলসংকটে নাজেহাল বিপুল সংখ্যক মানুষ৷ ভারতে মোট ৬ লক্ষ ৫৬ হাজার গ্রাম রয়েছে৷ সেখানে ১৯ কোটি ১৯ লক্ষ পরিবার বসবাস করে৷ জনসংখ্যা প্রায় ১৩০ কোটি৷ গতবছর জুনে মাসে নীতি আয়োগের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে ৬০ কোটি মানুষের জন্য বিশুদ্ধ পানীয় জলের কোনো বন্দোবস্ত নেই৷ দেশে মোট ১৮ শতাংশ মানুষ পাইপলাইনে পানীয় জলের পরিষেবা পাচ্ছেন।

সরকারের সনন্দ দ্বারা প্রতিষ্ঠিত, নীতি আয়োগ থেকে জুন মাসে একটি হতাশাজনক রিপোর্ট এ বলা হয়েছে, ২০২০ পর্যন্ত দিল্লির পাশাপাশি কুড়িটি ভারতীয় শহরের "ভূগর্ভস্থ পানির মাত্রা শূন্যে পৌঁছতে পারে। এটি একটি অত্যাশ্চর্য দাবি যা দেশের ভূগর্ভস্থে জমে থাকা পানির একটি জরুরি স্থায়িত্বের প্রশ্নে মনোযোগ আকর্ষণ করে। অশোক ট্রাস্ট ফর রিসার্চ ইন ইকোলজি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টের ওয়াটার, ল্যান্ড অ্যান্ড সোসাইটি প্রোগ্রামের নেতা ভিনা শ্রীনিভাসন বলেন যে, তিনি বিশ্বাস করেন না যে এই দাবিটি প্রমাণিত হতে পারে। কিন্তু ভূগর্ভস্থ পানির দ্রুত হ্রাস ক্রমবর্ধমান শহরটির একটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ।

সাম্প্রতিক দশকের বিপজ্জনক বৃদ্ধির ফলে, জাতিসংঘের মতে, মেট্রো এলাকার জনসংখ্যার এখন ২৯ মিলিয়ন পৌঁছেছে। শহরটির প্রাকৃতিক নিষ্কাশনগুলি মূলত বর্জ্য দ্বারা আবদ্ধ হয়েছে, হ্রদ এবং অন্যান্য জলপথগুলি শুকিয়ে গেছে বা জঞ্জাল এবং অন্যান্য দূষণকারী পদার্থের ভর্তি হয়েগেছে।

কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও কলাম্বিয়া ওয়াটার সেন্টারে পরিচালক অধ্যাপক উপমানু লাল সার্কেল বলেন, " নর্দমা, সেগুলি যেখানে বিদ্যমান, অপরিশোধিত বা আংশিকভাবে চিকিত্সাযুক্ত পানি নিষ্কাশন করে সেগুলোর শুকিয়ে যাওয়ায় জলশূন্যতার আশংকা আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে।"