অশান্ত পরিবেশ কে শান্ত করতে মালদা কালিয়াচক থানার পুলিশের ভূমিকা
পুষ্পপ্রভাত ডেক্স
পুষ্পপ্রভাত পত্রিকা
প্রকাশিত : ১১:২৮ পিএম, ৬ জুলাই ২০১৯ শনিবার
অশান্ত পরিবেশ কে শান্ত করতে মালদা কালিয়াচক থানার পুলিশের ভূমিকায় সাধারণ মানুষের সাধুবাদ।
অশান্ত পরিবেশ কে শান্ত করতে মালদা কালিয়াচক থানার পুলিশের ভূমিকায় সাধারণ মানুষ জানাই সাধুবাদ।সম্প্রতি কালিয়াচকে প্রতিবাদের নামে বিশৃঙ্খলা তৈরি করে একদল উঠতি যুবক। কোনোরকম সংগঠনের নামে নয়, সম্পূর্ণ নিজেদের উদ্যোগে তারা কালিয়াচক-১ ব্লকের ব্যস্ততম এলাকা চৌরঙ্গীতে মিছিল করে। উসকানিমূলক শ্লোগান দেওয়ার পাশাপাশি তারা রাস্তা অবরোধ করে বলে অভিযোগ। যদিও তাদের চেষ্টা সফল হয়নি। এলাকার শান্তিপ্রিয় মানুষ এই ধরণের অপপ্রয়াসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। কোনোরকম প্ররোচনায় পা না দিয়ে শান্তিপূর্ণ উপায়ে শেষ পর্যন্ত বিশৃঙ্খলাকারীরদের সরিয়ে দিতে সক্ষম হয় কালিয়াচক থানার পুলিশ। ঘটনার দিন ঐ যুবকের নানাভাবে প্ররোচনামূলক আচরণের মাধ্যমে পুলিশকে উত্যক্ত করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু তাদের ফাঁদে পা না দিয়ে মালদা কালিয়াচক থানার পুলিশ আধিকারিক এবং কর্মীরা অত্যন্ত সহনশীল মানসিকতার পরিচয় দিয়ে শান্ত থাকে। তবে শেষ পর্যন্ত সাধারণ মানুষই রুখে দাঁড়ানোই পুলিশের কাজ অনেক সহজ হয়ে যায়।টানা কয়েক বছর ধরে শান্ত থাকার পর ফের নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করতে অশান্তি তৈরির চেষ্টা শুরু করেছে স্বার্থান্বেষী কিছু মানুষ। এনিয়ে রীতিমতো উদবিগ্ন ব্লকের শান্তিপ্রিয় মানুষজন। তবে সেদিনের যে কিশোরদের ব্যবহার করা হয়েছিল, তাদের পেছনে কাদের হাত রয়েছে, তা অবিলম্বে তদন্ত করে দেখা দরকার। এমনটাই মনে করছেন শান্তিপ্রিয় মানুষেরা।
স্বাধীনতার পর থেকেই মালদা অর্থনীতির ভিত্তিকে অনেকটাই মজবুত রেখেছে কালিয়াচক ১, ২,এবং ৩ ব্লক। এখানকার রেশম শিল্প দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তেও সমাদর লাভ করেছে। এছাড়াও বিড়ি শিল্প, প্লাস্টিক শিল্প, আম এবং লিচু উৎপাদনেও এই তিনটি ব্লক শুধু জেলা নয়, সারা বাংলার মধ্যে সেরা। দেশের নির্মাণশিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় শ্রমিকের চাহিদার সিংহভাগ মিটিয়ে থাকেন এই ব্লকের মানুষরা। তবে আন্তর্জাতিক সীমান্তবর্তী জেলা হওয়ার সুবাদে কিছু মানুষ অসৎ পথেও রোজগার করে থাকেন বলে অভিযোগ। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বিভিন্ন সামগ্রী চোরাপথে পাচার করে থাকে তারা। নিজেদের মুনাফার জন্য সীমান্তের কিছু যুবকের অসহায়তার সুযোগ নিয়ে তাদেরকেও জড়িয়ে ফেলা হয় বেআইনি কাজে। চোরাচালানের ব্যবসার দখলদারি নিয়ে মাথাচাড়া দেয় দুস্কৃতীরা। তারাই কখনো কখনো সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে এলাকার শান্তি বিঘ্নিত হয়। তবে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা এই অব্যবস্থাকে কড়া হাতে দমন করার জন্য প্রথম থেকেই ব্যবস্থা নেয় তৃণমূল সরকার। ২০১১ সালে ক্ষমতা দখলের পরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুলিশকে নির্দেশ দেন বেআইনি সমস্ত কাজ বন্ধ করে দুস্কৃতীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার। তাঁর নির্দেশের পরেই মালদা জেলা পুলিশ এবং কালিয়াচক থানার পুলিশ যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে প্রচুর দুস্কৃতীকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশের ভয়ে অনেকে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। জালনোট, বেআইনি অস্ত্রের কারবার সহ সীমান্তে চোরাচালান অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আসে। পুলিশ প্রশাসনের সক্রিয়তায় কালিয়াচকে শান্তি ফেরায় স্বস্তির নিশ্বাস ছাড়েন সাধারণ মানুষও। পুলিশি ভূমিকায় তাঁরা সন্তোষ প্রকাশ করেন।
দীর্ঘদিন ধরে কার্যত পায়ের তলার মাটি হারিয়ে দুস্কৃতীদের একাংশ ফের মাথাচাড়া দেওয়ার চেষ্টা শুরু করেছে বলে অভিযোগ। উঠতি কিছু যুবক এবং কিশোরকে তারা ঢাল হিসাবে ব্যবহার করে নিজেদের অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার চেষ্টা শুরু করেছে। অনেকের বক্তব্য, মাঝেমধ্যে এলাকায় কিছু বিক্ষিপ্ত ঘটনার পেছনে উসকানি দিচ্ছে এই অসাধু চক্র। সমাজের শান্তি নষ্ট করে তারা নিজেদের ফায়দা লুটার চেষ্টার মতো মারাত্মক খেলায় মেতেছে। এর বিরুদ্ধে অবশ্য সজাগ রয়েছে পুলিশ প্রশাসন। তবে সজাগ থাকতে হবে সাধারণ মানুষকেও। অশান্তি রুখতে কালিয়াচক থানার আইসি আশিস দাসের নেতৃত্বে পুলিশবাহিনী যে সংযমের পরিচয় দিয়েছে তাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন কালিয়াচকের সমস্ত স্তরের মানুষ। এলাকার বিশিষ্ট সমাজসেবী এনারুল হক বলেন, পুলিশ প্রশাসনের উদ্যোগে কালিয়াচকে শান্তি ফিরেছে। সেই শান্তিকে বজায় রাখার জন্য প্রশংসনীয় কাজ করে চলেছে পুলিশ। মুষ্টিমেয় কিছু মানুষ সেই শান্তি ভঙ্গ করতে চেষ্টা করছে। এই ঘটনা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। পুলিশের পাশাপাশি সমাজের সমস্ত মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে এই সমাজবিরোধী শক্তিকে রুখতে। পাশাপাশি, যারা সমাজকে অশান্ত করার চেষ্টা করছে, তাদের চিহ্নিত করে পুলিশ যথাযথ ব্যবস্থা নিক। এমন দাবিও জানাব।অন্য দিকে সুজাপুরের সমাজ সেবি বিসু সেখ ওরফে সেলিম সেখ বলেন , কালিয়াচক থানা এলাকার অনেক গ্রামে মাদক নেশার কারবার চলছে ।সে সব বন্ধ না করলে উঠতি যুবক দের আটকানো মুশকিল ।কালিয়াচক থানার আইসি সাহেব ভাল কাজ করছেন ।বর্তমান আই সি সাহেব এলাকা শান্ত করতে যে উদ্যোগ গ্রহন করেছেন তাকে আমরা সমর্থন করছি ।আলিপুরের হাবিবুর সেখ নামের এক যুবক বলেন ,কালিয়াচক এর ঘটনায় পুলিশ যে ভাবে কাজ করেছে তাতে আমরা খুশি ।কালিয়াচক ১ ব্লক যুব তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি ও যুব নেতা সারিউল সেখ বলেন , গত রবিবারের ঘটনায় আই সি সাহেব ও তার দল বল যে ভাবে শান্ত মাথায় কাজ করেছেন তা প্রশংসা যোগ্য ।কিছু লোক অশান্তি করার চেষ্টা করেছে তাদের খুজে বের করা দরকার ।সাধারন নিরিহ মানুষদের যেন হেনস্থা করা না হয় ।শান্তি বজায় রাখার জন্য প্রশংসনীয় কাজ করে চলেছে পুলিশ ।আমরা পুলিশের এমন কাজ কে কালিয়াচক বাসী সমর্থন করছি।