পুনর্বাসনের দাবিতে সরকারি অফিসে স্মারকলিপি
মোহঃ নাজিম আক্তার
পুষ্পপ্রভাত পত্রিকা
প্রকাশিত : ০৭:৪৮ পিএম, ১২ জুন ২০১৯ বুধবার
হরিশ্চন্দ্রপুর
81নং জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কারণে হরিশ্চন্দ্রপুরের ভবানীপুর ব্রিজ মোড় থেকে সরানো হচ্ছে দোকানঘর।সোমবার থেকে দোকানদাররা নিজেই শুরু করেছ দোকান ভাঙার কাজ।দোকানদারদের কপালে পরেছে চিন্তার ভাঁজ। তাই ন্যায্য পাওনা পুনর্বাসনের দাবিতে হরিশ্চন্দ্রপুর জীবন জীবিকা রক্ষা কমিটি এগিয়ে এসেছে ।শতাধিক দোকানদাররা বৃহস্পতিবার স্মারকলিপি ও দাবীসমূহ জমা করেন হরিশ্চন্দ্রপুর - ১ নং ব্লকের বিডিও, চাঁচল এসডিও, এসডিপিও, জাতীয় সড়ক চাঁচল সাবডিভিশন ইঞ্জিনিয়ার, হরিশ্চন্দ্রপুরের কংগ্রেস বিধায়ক তথা মুস্তাক আলম ও চাঁচলের কংগ্রেস বিধায়ক তথা আসিফ মেহবুব এবং হরিশ্চন্দ্রপুর বিএলআরও প্রভৃতি সরকারি আধিকারিক অফিসে ।সকলেই উপযুক্ত পদক্ষেপ দ্রুত গ্রহণে আশ্বাস দিয়েছেন ।
হরিশ্চন্দ্রপুর জীবন জীবিকা রক্ষা কমিটির যুগ্ম সম্পাদক মুশারফ হোসেন ও তাহির আলি, সভাপতি মোকরম আলি অরফে স্বপনরা তাদের দাবিগুলি জানান' পুনর্বাসন না করে দোকানদারদের নির্মূলে উচ্ছেদ করার অমানবিক সিদ্ধান্ত বাতিল করা হক।জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের ফলে বিপন্ন সকল ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জীবন জীবিকা রক্ষার আন্দোলনে সামিল হোক। পুনর্বাসনের কাজে সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তর এক আধিকারিকদের জীবন জীবিকা রক্ষার সহৃদয় সক্রিয়তা চাই। সদাব্যস্ত ভবানীপুর ব্রিজ চত্বরটিকে সর্বাধুনিক এবং বহুমুখী সুবিধাযুক্ত স্থানরূপে উন্নতি করতে সকল উন্নয়নমূলক দপ্তরের সক্রিয়তা চাই '।
এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা জানান প্রায় তিন বছর আগে শুরু হয়েছে 81 নং জাতীয় সড়কের কাজ।সরকারি নিয়ম অনুযায়ী মাপজোক করে রাস্তা ধারে খাস জমিতে ইতিমধ্যেই খুটি পোতা হয়েছে।রাস্তার দুই পাশের গাছগুলি কাটা পরেছে এক বছর আগেই।জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষরা নোটিশ জারি করে সরাচ্ছে দোকানঘর গুলি ।
দীর্ঘ 30 বছর ধরে স্থানীয়ভাবে দোকান চালিয়ে আসছে তাঁরা । দোকানিই হচ্ছে তাদের একমাত্র আয়ের উৎস এবং রুজিরুটির পথ।এখন কিভাবে তারা সংসার চালাবে এবং ছেলেমেয়েদের লেখা- পড়া করাবে এই নিয়ে প্রায় শ'খানেক দোকান মালিক দুশ্চিন্তায় পড়েছে ।অনেক দোকানদার বয়সের ভারে জীর্ণ হয়ে পড়েছে ।সংসার লালন পালনে জমিতে বা ভিন রাজ্যে কাজ করা তাদের পক্ষে সম্ভবও না।
হরিশ্চন্দ্রপুরের ভবানীপুর ব্রিজ চৌরাস্তার মোড়ে গড়ে উঠেছে প্রায় শ'খানেক দোকান।রয়েছে মুদিখানা,পান,কাপড়,হোটেল, রেস্তোরাঁ, চা, ফল, সাইকেল প্রভৃতির দোকান ।ভবানীপুর ব্রিজ স্ট্যান্ডে দৈনিক লক্ষাধিক মানুষের ভিড় হয় ।ভবানীপুর, বাংরুয়া, আলিনগর, গাঙগনদীয়া, রাড়িয়াল, সালালপুর প্রভৃতি গ্রামের মানুষদের একটি পছন্দের আড্ডার জায়গা এই ব্রিজ মোড়।রাত বারোটা পর্যন্ত থাকে লোকেদের জমজমাটিভাব।ভবানীপুর ব্রিজ চৌরাস্তার মোড় হয়ে 81নং জাতীয় সড়কের বাইপাস রাস্তা রাজ্য সড়কটি গেছে ভালুকার দিকে । অপরদিকে অন্য বাইপাস রাস্তাটি গেছে কুশিদার দিকে ।হরিশ্চন্দ্রপুর ও চাঁচলের দিকে গেছে 81নংজাতীয় সড়কটি ।
স্থানীয় দোকানদার পানবিক্রেতা মহ:আলম , ফলবিক্রেতা মন্টু , চা বিক্রেতা কালুয়া , হোটেল মালিক গোবিন্দ, মিষ্টি বিক্রেতা আকবর, সাইকেল মেকানিক্যাল হীরা , নসিমরা জানান 'একমাস আগে দোকানঘর সরানোর জন্য নোটিস দিয়ে জানিয়ে দিয়েছেন । রমজান মাসের জন্য আমরা এক মাস সময় চেয়ে নিয়ে ছিলাম ।সোমবার থেকে দোকান ভাঙার কাজ শুরু করেছি ।
তাহারা আরও জানান, এই দোকান করেই চলত তাদের সংসার,ছেলে- মেয়েদের লেখাপড়া।সকাল থেকে রাত পর্যন্ত যা বিক্রি হত তা ধিরে ধিরে জমিয়ে অনেকেই পাকা দোকান ঘরও বানিয়েছিল ।এখন তারা কিভাবে সংসার চালাবে এই নিয়ে চিন্তায় পরেছে ।সরকার থেকেও তাদের কোন ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি ।কেউ অভাবের তাড়নায় দোকান বন্ধ করে অনেক দিন আগেই ভিন রাজ্যে কাজ করতে চলে গেছে।কেউ আবার চাষবাসের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পরেছে । সরকারের কাছে তাদের দাবি ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে দেওয়া হোক । নইলে তারা বৃহত্তর আন্দোলনে নামবে।