হরিশ্চন্দ্রপুরে স্কুল শিক্ষকদের প্রাইভেট টিউশনের রমরমা ব্যবসা
মো : নাজিম আক্তার
পুষ্পপ্রভাত পত্রিকা
প্রকাশিত : ১০:৪৫ পিএম, ১ জুন ২০১৯ শনিবার
হরিশ্চন্দ্রপুরঃ
স্কুলশিক্ষকদের প্রাইভেট টিউশন নিষিদ্ধ করার পরও আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে চলছে স্কুল শিক্ষকদের গৃহশিক্ষকতা ৷
আইন বলছে অন্য কথা ৷ কিন্তু আইনের পরোয়া না করেই রমরমিয়ে চলছে বেআইনি ‘ব্যবসা’ ৷ আগামীকে পথ দেখানো যাদের কাজ তারাই দিচ্ছেন আইন অমান্যের প্রাথমিক শিক্ষা ৷ স্কুলশিক্ষকদের প্রাইভেট টিউশন নিষিদ্ধ করার পরও আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে চলছে স্কুল শিক্ষকদের গৃহশিক্ষকতা ৷
এমনই অভিযোগ উঠেছে হরিশ্চন্দ্রপুর ও তুলসীহাটা স্কুল শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ।হরিশ্চন্দ্রপুর প্রাইভেট শিক্ষক সমিতির সদস্যরা জানান , 'হরিশ্চন্দ্রপুর ও তুলসীহাটা এসআই কার্যালয় ও বিডিও অফিসে লিখত অভিযোগের এক বছর কেটে গেলেও এখনও পর্যন্ত বন্ধ হয়নি স্কুল শিক্ষকদের প্রাইভেট টিউশন ব্যবসা । তারা জানান, আইন অনুযায়ী স্কুলের শিক্ষক -শিক্ষিকারা প্রাইভেট টিউশন পড়তে পারেন না। অভিযোগ প্রমাণে কড়া ব্যবস্থার হুশিয়ারি দিয়েছে শিক্ষা দপ্তর।শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে করা হতে পারে শো-কজ ।তা সত্ত্বেও জেলার বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ করে হরিশ্চন্দ্রপুর ও তুলসীহাটায় প্রাইভেট টিউশন পড়ান স্কুল শিক্ষকদের একাংশ ।
একাধিক স্কুলের শিক্ষকা সরকারি নির্দেশ অমান্য করে এই কাজ করছে ।এর ফলে বেকার ছেলেমেয়েরা যারা প্রাইভেট টিউশন পড়ান তাঁদের রুজিরুটিতে টান পড়ছে।কোনও সরকারই 100 শতাংশ কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারবে না ।সেক্ষেত্রে বেকার যুবকরা যদি পাড়ার মোড়ে আড্ডা না দিয়ে নেশা ভাঙ বা কোনও অসামাজিক কাজকর্মের সঙ্গে না জড়িয়ে টিউশনির মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে, সেটাকে তো সবার উৎসাহ দেওয়া উচিৎ।স্কুল শিক্ষকদের প্রাইভেট টিউশনের বিরুদ্ধে জোট বেঁধেছে শিক্ষিত বেকারা।
স্কুল শিক্ষকরা ভয় দেখিয়ে ,চাপ দিয়ে ছাত্র কেড়ে নিচ্ছে ।এখন বোর্ডের পরিক্ষাতে 20 ও 30 শতাংশ নম্বর স্কুল শিক্ষকদের হাতেই থাকে ।তাই ছাত্র-ছাত্রীরা সহজেই বেশি নাম্বার পাওয়ার আশায় স্কুল শিক্ষকদের দিকে ঝুঁকছে।
কিছু শিক্ষক যুক্তি দেন, স্কুলের পরিকাঠামোয় তাঁরা সেরাটা দিতে পারেন না ।এদিকে হলঘরে বক্স লাগিয়ে দেড়শ ছেলেমেয়েকে পড়ান ।সেখানে সেরাটা কিভাবে দেন ।
২০০৯ সালে পাশ হওয়া শিক্ষার অধিকার আইনের ২৮ নং ধারা অনুযায়ী, সরকারি, সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুল ও বেসরকারি স্কুলের শিক্ষকদের প্রাইভেট টিউশনি বা অন্য কোনও রকম প্রাইভেট প্র্যাক্টিস নিষিদ্ধ করা হয় ৷ ২০১১ সালে রাজ্য সরকার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে স্কুল শিক্ষকদের এই নির্দেশিকা সম্পর্কে জানালেও বদলায়নি ছবিটা ৷
সকলের চোখের সামনেই স্কুলে পড়ানোর পাশাপাশি বাড়িতেও ব্যাচের পর ব্যাচ ছাত্র পড়িয়ে উপরি উপার্জন করছেন শিক্ষকেরা ৷ অথচ নিয়ম বলছে, কোনও শিক্ষক স্কুলের বাইরে প্রাইভেট টিউশনি করছেন একথা জানতে পারলেই প্রধানশিক্ষক তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নেবেন এবং তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে ডিস্ট্রিক ইনস্পেকটর ঘটনার তদন্ত করে চুড়ান্ত পদক্ষেপ নেবেন ৷ বিজ্ঞপ্তির পর আট বছর কেটে গেলেও স্কুল শিক্ষকদের বেআইনি এই কাজ বন্ধে আজ পর্যন্ত কোনও পদক্ষেপ নেওয়ার নজির নেই।
স্কুল শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা যায় -বাম আমলেই সরকারি স্কুল শিক্ষকদের টিউশন করা বন্ধের ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া হয় ।প্রতি ছ'মাস অন্তর মুচলেকা
জমা দিতে হয় ।