শুক্রবার   ১৫ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১ ১৪৩১   ১৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

উচচ মাধ্যমিকে সাফল্য, চাঁচলে রাজমিস্ত্রীর মেয়ে নার্স হতে চাইছে

উজির আলি

পুষ্পপ্রভাত পত্রিকা

প্রকাশিত : ০৭:৩৭ পিএম, ৩১ মে ২০১৯ শুক্রবার

চাঁচলঃ

দরিয়াপুর-ইমামপুর- বরাম্বল উচচ বিদ্যালয় থেকে এবারের উচচ মাধ্যমিক পরীক্ষায় প্রথম স্থান করে জিমি খাতুন।

রাজ মিস্ত্রির কন্যা জিমি খাতুন এবারের উচচ মাধ্যমিক পরীক্ষায় কলা বিভাগে ৪৪৫ পেয়েছে। সাধারন ঘরের মেয়ের সাফল্যে বিদ্যালয় সহ গালিমপুর এলাকার মানুষ খুশিতে উল্লিফূত।

 চাঁচল ১ নং ব্লকের খরবা গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত শ্রীপতিপুর গ্রামের জয়নাল আলীর প্রথম কন্যা জিমি খাতুন। এক ভাই, এক বোনের মধ্যে জিমি সবার বড়ো। দুই ভাইবোনই বর্তমানে পাঠরত। দিনমজুর বাবা তাদের পড়াশুনার খরচ ও সংসারের হাল টানতে বর্তমানে দিল্লী রাজমিস্ত্রীর কাজে কর্মরত। পরিবার সূত্রে খবর আসছে ঈদ ঘরে ফিরবে বাবা। সে ঘরে তিন সন্তান।জিমির মা একজন গৃহিণী। বাবা ঘরে নেই, ভাইবোন ছোটো তাই জিমিকেই প্রতিনিয়িত বাজার,রেশন ইত্যাদি সংসারি কাজে ছুটতে হয়।

নিজেদের দু বিঘে জমি রয়েছে। তবুও আবারও মহানন্দা নদীর ধারে।তবে বেশিরভাগ সময় বন্যা বা বৃষ্টির জলে ফসল নষ্ট হয়। ফলে সর্ববৎসরের আহারটুকুও জোটেনা। পরিবারে দিনমজুর বাবা ছাড়া কোনো উপার্জনক্ষম ব্যক্তি নেই। সাধারন ঘরের মতো ভালো চলে না সংসার।ফলে সংসার সচল রাখতে আর সন্তান দের লেখাপড়ার খরচ যোগাতে বাবা জয়নাল ভিন রাজ্যে। রাজমিস্ত্রির জোগানদার হিসেবে কাজ করে যে মজুরি পায় তা দিয়ে কোনো মতে সংসারের খরচ আর ছেলে মেয়েদের পড়ার খরচ চালায়। বাড়িতে বিদ্যুৎ থাকলেও নির্জন গ্রামে প্রায় প্রাকৃতিক দুর্যোগে কারনে অকারনে বিদ্যুত ব্যাহত হয়। লণ্ঠনের আলোতে সাফল্য জিমির। গালিমপুর এলাকায় তিন গৃহশিক্ষকের শিক্ষা দানে বিদ্যালয়ে প্রথম স্থান জিমির। বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা যথেষ্ট সহযোগিতা আর উৎসাহ দিয়েছেন তাকে। ফলে সে এবারের উচচ মাধ্যমিক পরীক্ষায় কলা বিভাগে ৪৪৫ পেয়ে বিদ্যালয়ে প্রথম স্থান অধিকার করেছে। জিমি জানায়, সে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করে একজন আদর্শবান নার্স হতে চায়,মানুষের সেবা করতে চাই। জিমির মা জানান, সবার সহযোগিতায় তার মেয়ে ভালো ফল করেছে। তার নার্স হয়ে মানুষের সেবা করার খুব ইচ্ছা। মেয়ে শান্ত সভাবের,পড়াশুনা নিয়ে খুব ব্যস্ত থাকত। পড়াশুনার ফাকে মেয়ে ঘরের রান্নাও করে। 

জিমির বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাদেরুজ্জামান মহাশয় জানান, জিমি বরাবরই মেধাবী। স্কুলের শিক্ষকরা তাকে যথেষ্ট সহযোগিতা দিয়েছিলেন। সবার সহযোগিতা পেলে ভবিষ্যতেও ভালো ফল করবে। তাই জিমির উচ্চ শিক্ষায় যাতে কোনো সমস্যা না হয় সেজন্য তিনি সরকার ও সমাজের হৃদয়বান-বিত্তবানদের কাছে সব প্রকার সহযোগিতার দাবি জানাবেন।