উচ্চমাধ্যমিকে স্কুলে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করল আবু
মোহঃ নাজিম আক্তার
পুষ্পপ্রভাত পত্রিকা
প্রকাশিত : ১২:৫৩ পিএম, ২৮ মে ২০১৯ মঙ্গলবার
হরিশ্চন্দ্রপুর
হরিশ্চন্দ্রপুর - ১ নং ব্লকের তুলসীহাটা জিপির রাড়িয়াল গ্রামের বাসিন্দা কনুয়া ভবানীপুর কে আর এইচ এন হাই মাদ্রাসার ছাত্র আবুবক্কর আহমেদ
417 নম্বর পেয়ে উচ্চমাধ্যমিকে স্কুলে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে। প্রথম হয়েছে মামুনি খাতুন।তার প্রাপ্ত নম্বর 428। তার এই সাফল্যে শিক্ষক শিক্ষিকা থেকে পরিবারের লোকজন সহ এলাকাবাসী ভীষণ খুশি।
সোমবার সকাল থেকেই পরিবারের সকলের চোখ ছিল মোবাইলে। সাফল্যের খবর পেতেই আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীরা একে একে মিষ্টি মুখ করাতে শুরু করেন।অভিনন্দন জানাতে ছুটে আসেন স্থানীয় রাজনৈতিক দলের নেতারাও ।
জানা গেছে, কলা বিভাগের ছাত্র আবুবক্কর আহমেদ বাংলায় পেয়েছে 81, ইংরেজিতে 56, কম্পিউটারে 73 , ভূগোলে 94 , দর্শনে 86 , রাষ্ট্রবিজ্ঞানে 83.মোট 417 নম্বর পেয়েছে।
কনুয়া ভবানীপুর কে আর এইচ এন হাই মাদ্রাসার পড়ুয়া এই ছাত্রটি হরিশ্চন্দ্রপুরের রাড়িয়াল গ্রামের বাসিন্দা। বাবা খেইরুদ্দিন আহমেদ সালাল পুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ।মা সেলিনা আখতার গৃহবধূ।আবুবক্কর আহমেদের এই ফলে বাবা মা দুজনেই ভীষণ খুশি।
মা সেলিনা আখতার বলেন, পড়াশোনায় প্রতি অদম্য টানের ফলেই ছেলের রেজাল্ট হয়েছে।
যদিও মেধাবী এই ছাত্র আবুবক্কর আহমেদ বলেন , ভালো ফল হবে আশা করেছিলাম। কিন্তু স্কুলের মেধা তালিকায় নাম থাকবে ভাবি নি। বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও গৃহ শিক্ষকেরা পড়াশোনার ব্যাপারে যথেষ্ট সাহায্য করেছে বলে সে জানায়।
আবুবক্কর আহমেদ আরও জানান মোট তিন জন গৃহশিক্ষক ছিল তাঁর। বাবা-মা এবং দাদারা পড়াশোনার ব্যাপারে সব সময় গাইড দিতেন।দিনের বেলাটুকু স্কুল আর টিউশনে চলে যেত। তাই রাত জেগেই পড়া করতে হতো। পড়াশোনার পাশাপাশি আর কোন বিষয়ে কি আগ্রহ রয়েছে জানতে চাইলে ছাত্রটি লাজুক ভাবে জানায়, "পড়াশোনার ফাঁকে মাঝেমধ্যে পরিবারের সকলের সঙ্গে একটু টিভিতে ক্রিকেট খেলা দেখা, বন্ধুদের সঙ্গে কেরাম খেলা আর গান শুনতাম। অবসরে এটুকুই করার সুযোগ পেতাম।"
আবুবক্কর আহমেদ কলেজে ভূগোল অনার্স নিয়ে ভর্তি হতে চায় ।কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা লাভ করে ভূগোলের একজন আদর্শবান শিক্ষক হতে চায় ।আবুবক্কর জানান "এখনও গ্রামের অনেক ছেলেমেয়েরা আর্থিক অভাবের জন্য উচ্চ শিক্ষা লাভ করার আগেই শিশু শ্রমিক কাজে যুক্ত হয়ে পরে ।তাদের স্বপ্ন গুলি মাটির ঘরের চার দেওয়ালের মধ্যে ভেস্তে যায় ।আবুবক্কর সিদ্ধান্ত নিয়েছে উচ্চ শিক্ষা লাভ করে সেই সমস্ত অসহায় ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনা স্বপ্নের এক বাস্তব রূপ দিবে ।