সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১   ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

প্রধানমন্ত্রী নিয়মিত রোগী দেখেন, করেন অস্ত্রোপচারও

পুষ্প প্রভাত ডেক্স

পুষ্পপ্রভাত পত্রিকা

প্রকাশিত : ১১:৩৭ এএম, ১৪ মে ২০১৯ মঙ্গলবার

প্রধানমন্ত্রী হয়েও ডাক্তারি পেশা ও মানুষের প্রতি সীমাহীন ভালোবাসার টানে নিজ হাতে রোগীদের সেবা দিয়ে যাওয়ার ব্রত ত্যাগ করতে পারেননি ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং।

পাঁচ দিন প্রধানমন্ত্রীর দফতর সামলে প্রতি শনিবার সশরীরে হাসপাতালে উপস্থিত থেকে রোগী দেখেন, নিজ হাতে করেন অস্ত্রোপচার। রোববার সারা দিন কাটান পরিবারের সঙ্গে।

১৯৯১ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে পড়েছেন ভুটানের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং। এমবিবিএস কোর্স শেষ করার পর একটি প্রশিক্ষণও নেন ময়মনসিংহে। তারপর জাপান, অষ্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে উচ্চশিক্ষা নেন শেরিং। শুরু হয় পথ চলা। প্রায় এক দশক মাঠপর্যায়ে ডাক্তারি পেশায় ব্যাস্ত ছিলেন তিনি।
 
২০১৩ সালে অনেকটা আকস্মিকভাবেই দেশটির জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেন তিনি। কিন্তু ভাগ্য সহায় হয়নি। তবে নির্বাচনের হার মেনে নিয়ে আবার মনোনিবেশ করেন ডাক্তারি পেশায়। এসময় গ্রামে-গঞ্জে চিকিৎসা দিয়ে বেড়িয়েছেন মানুষকে। তারপর ২০১৮ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে প্রধানমন্ত্রী হন তিনি।
 
প্রধানমন্ত্রী হয়ে দেশের স্বাস্থ্যখাতকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করেন তিনি, নেন নানামুখী পদক্ষেপ। নাগরিকদের সুন্দর স্বাস্থ্য আর সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যকে দেশের উন্নয়নের মাপকাঠি হিসেবে বিবেচনা করেন লোটে শেরিং।

বার্তা সংস্থা এএফপিকে তিনি বলেন, এমনিতে কেউ ফুটবল খেলে কাটান সপ্তাহান্তের অবসর, কেউবা খেলেন গল্ফ৷ পুরো সপ্তাহের কর্মদিবস শেষে আমিও ক্লান্ত হয়ে পড়ি। আর তাই প্রতি শনিবার রোগীদের নিজ হাতে সেবা দেই। এতে আমি আনন্দ পাই, আমার শারীরিক ও মানসিক চাপ কমাই।

ডাক্তারি এবং প্রধানমন্ত্রীত্ব দুটোকেই এক চোখে দেখেন শেরিং। এক মনে করার একটা ব্যাখ্যাও দিয়েছেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী। হাসপাতালে একজন ডাক্তার রোগীকে সারাতে ওষুধ দেন কিংবা শরীরের বিভিন্ন অংশ পরীক্ষা করে দেখেন। প্রধানমন্ত্রীর কাজও একই, কারণ, তাকে সরকারের বিভিন্ন পলিসি পরীক্ষা করে দেখতে হয়, সার্বিক অবস্থার উন্নতির চেষ্টা করতে হয়।
 
প্রধানমন্ত্রীর চিকিৎসা পেয়ে রোগীরাও খুশি। মূত্রাশয়ের সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন বুমথাপ। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে তাঁর অস্ত্রোপচার করেন প্রধানমন্ত্রী নিজেই। প্রধানমন্ত্রীর এমন সেবা পেয়ে ভীষণ আনন্দিত এবং আস্বস্ত বুমথাপ।

প্রতিদিন নিজেই গাড়ি চালিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে যান লোটে শেরিং। পথিমধ্যে পড়ে হাসপাতাল। কিন্তু সপ্তাহের পাঁচদিন তো তাকে সামলাতে হয় দপ্তর। আর তাই সামলে নেন নিজের আবেগ।

বললেন, হাসপাতাল দেখে আমার মনে হয় গাড়িটি ঘুড়িয়ে যদি হাসপাতালে চলে যেতে পারতাম!