সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১   ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বয়স-৫০-হওয়ায়-আগেই-অন্ধ-হয়ে-যায়-এই-গ্রামের-পুরুষরা

পুষ্প প্রভাত ডেক্স

পুষ্পপ্রভাত পত্রিকা

প্রকাশিত : ১১:১৭ এএম, ১৪ মে ২০১৯ মঙ্গলবার

সাড়ে তিন শ’ মানুষ নিয়ে প্রায় তিন হাজার ফুট উচ্চতায় অবস্থিত সবুজ গাছে ঘেরা ছোট্ট একটা পাহাড়ি গ্রাম। এই গ্রামের ৭৫ শতাংশ মানুষই অন্ধত্বের শিকার। পেরুর ‘প্যারান’ নামের এই গ্রামটি ‘অন্ধদের গ্রাম’ বা দৃষ্টিহীনদের গ্রাম  নামেই পরিচিত।

এই গ্রামের বেশির ভাগ মানুষই চোখের একটি জিনগত রোগে আক্রান্ত। চোখের এই রোগটির নাম ‘রেটিনাইটিস পিগমেনটোসা’ বা রাতকানা রোগ।

চক্ষু চিকিৎসকদের মতে, ‘রাতকানা’ রোগের জন্য প্রধানত দায়ী এই রেটিনাইটিস পিগমেনটোসা। এই রোগের চোখের টানেল ভিশন নষ্ট হয়ে যায়। চোখের ভেতরে রেটিনা নামের যে গুরুত্বপূর্ণ পাতলা মেমব্রেন থাকে, তার প্রধান দুটি অংশ হল রড ও কোণ। এই রড আর কোণ ফটো রিসেপ্টরের কাজ করে। এই রোগের ফলে রেটিনার রড কোষ ধীরে ধীরে তার কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।

প্যারান গ্রামের বেশির ভাগ মানুই রেটিনাইটিস পিগমেনটোসায় আক্রান্ত। এই রোগের কারণে এ গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে কারো শৈশব থেকেই দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ, কারো আবার বয়স পঞ্চাশ পার না হতেই চোখের সামনে অন্ধকার নেমে আসে।

জানা যায়, এক সময় ওই অঞ্চলে সোনা, রুপা খোঁজতে বের হয় একটি খনন সংস্থা। এই খনন সংস্থার কল্যাণেই এ গ্রামের মানুষ প্রথম চিকিৎসার সুযোগ পান। সে সময়ই এই গ্রামে আসা একদল চিকিত্সক পরীক্ষা করে জানিয়ে দেন, চোখের এই রোগ আসলে জন্মগত। এক্স ক্রোমোজোমের সমস্যা থেকেই এই রোগের সৃষ্টি হয়।

নারীদের চেয়ে ‘রেটিনাইটিস পিগমেনটোসা’-এ পুরুষরাই বেশি আক্রান্ত হন। পর পর বেশ কয়েকটি ঘটনায় দেখা গেছে, এই গ্রামে ছেলে সন্তান জন্মালে তার অন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা অনেকটাই বেশি। এই কারণেই এই গ্রামের বাসিন্দারা অন্য কোনো এলাকার মানুষের সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্কে জড়ান না। তাই সভ্যতার আলো পৌঁছালেও, পেরুর এই গ্রামটি আজও দেশের অন্যান্য জনপদ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে।