সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১   ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিশ্বের বৃহত্তম বিমানবন্দর তুরস্কের ইস্তানবুলে 

জাগরণ ডেস্ক

দৈনিক জাগরণ

প্রকাশিত : ০৭:২৬ পিএম, ২ নভেম্বর ২০১৮ শুক্রবার

বিশ্বের প্রথম ‘সবুজ’ বা পরিবেশবান্ধব বিমানবন্দর নির্মিত হচ্ছে তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরে। ইস্তাম্বুলের ইউরোপীয় অংশে নির্মিত হচ্ছে বিশ্বের বৃহত্তম এই বিমানবন্দর। এর নাম হবে ‘ইস্তানবুল বিমানবন্দর’। তুরস্কের কামাল আতাতুর্ক বিমানবন্দরের পরিবর্তে এখন থেকে এটিই ইস্তাম্বুলের প্রধান কেন্দ্র হিসেবে বিবেচিত হবে।  


তুরস্কের নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত বিমানবন্দরটির প্রথম ধাপের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এই অংশে আপাতত ৩৪৭টি বিমান অবস্থান করতে পারবে। চালু হওয়া দুটি রানওয়ের একটি ৪.১ কিলোমিটার এবং অপরটি ৩.৭৫ কিলোমিটার দীর্ঘ। এ অবস্থায় বছরে ৯ কোটি যাত্রী ব্যবহার করতে পারবে। আর সম্পূর্ণ কাজ শেষ হলে বছরে প্রায় ১৫ কোটি যাত্রীকে সেবা দেয়া সম্ভব হবে। ৭ কোটি ৬০ লাখ বর্গমিটার আয়তনের বিমানবন্দর থেকে প্রাথমিক পর্যায়ে প্রতি বছরে আয় হবে ২২ বিলিয়ন ডলার। ২০৩০ সালে তা ৪০বিলিয়ন ডলারে পৌঁছবে।


এক ছাদের নিচে পৃথিবীর সর্ববৃহৎ টার্মিনাল ভবন এবং ডিউটি ফ্রি এরিয়া ছাড়াও এতে যুক্ত রয়েছে অত্যাধুনিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা, আন্ডার ফ্লোর রাডার, এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল টাওয়ার, একটি কার্গো হাউজসহ আরো অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা। পুরো বিমানবন্দর জুড়ে লাগানো হয়েছে কমপক্ষে ৯ হাজার সিসিটিভি ক্যামেরা।


এছাড়াও এই বিমানবন্দরে তৈরি হতে যাচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় টার্মিনাল ভবন, ৬টি পৃথক রানওয়েতে ৫০০টি বিমান একসাথে ধারণ করতে সক্ষম হবে ১১৪টি বিমান প্রধান টার্মিনালে অবস্থান করতে পারবে। বিমানবন্দরটির ৫৬০০০ বর্গমিটার ডিউটি-ফ্রি এরিয়াতে থাকবে দেশী-বিদেশী প্রায় ৪০০টি ব্র্যান্ডের আউটলেট। ৭০ হাজার গাড়ির পার্কিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে। পার্শ্ববর্তী এলাকায় আরও ১৮ হাজার গাড়ি রাখার জায়গা থাকবে যা হবে ইউরোপের বৃহত্তম পার্কিং লট। এই সকল ব্যবসায়িক স্থাপনাই হবে পরিবেশবান্ধব। তুরস্কের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় এবং কলাকৌশলের দিক থেকেও জটিল এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে ইস্তাম্বুল গ্র্যান্ড এয়ারপোর্ট কোম্পানি। লিম্যাক, কোলিন, সেনগিজ, মাপা ও ক্যালন এই পাঁচটি বৃহৎ কোম্পানির মিলিত কনসোর্টিয়াম এই বিমানবন্দরটির নির্মাণ কাজ করছে।

প্রকল্পটি যথাসময়ে শেষ করতে ৩০ হাজার কর্মী সপ্তাহে সাতদিন তিন শিফটে রাতদিন কাজ করে চলছেন।  তুরস্ক ও বিদেশের মোট ২৫০ জন স্থপতি এবং পাঁচ শতাধিক প্রকৌশলী এই নির্মাণকাজে যুক্ত আছেন। গত ৩১ অক্টোবর তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারার উদ্দেশ্যে এর প্রথম ফ্লাইট ছেড়ে যাবার মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়।  আশা করা হচ্ছে এই বছরের শেষের দিকে ২৫০টির বেশি পাইলটের মাধ্যমে ৩৫০টি গন্তব্যস্থলে প্রতিদিন ২ হাজার বিমান চলাচল করতে পারবে। 


কাজ শেষ হবার পর এই নতুন বিমানবন্দর বিশ্বের সবচেয়ে ব্যস্ত বিমানবন্দরগুলোর চেয়েও তিনগুণ যাত্রীকে সেবা দিতে পারবে। ২৯ অক্টোবর সোমবার তুর্কি প্রজাতন্ত্রের ৯৫তম প্রতিষ্ঠবার্ষিকে ঐতিহাসিক এই বিমানবন্দরটির উদ্বোধন করেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েব এরদোগান।